জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি যক্ষার জন্য প্রনীত কৌশলগত পরিকল্পনা (২০১৮-২০২২) অনুসারে গুনগত ও মানসম্মত উপায়ে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে।
অদ্য ১৮ই অক্টোবর, ২০১৮ইং রোজ বৃহঃবার মার্কিন সহযোগী সংস্থা ইউএসএইডের পক্ষ এক জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, রিজিওনাল টিবি রেফারেন্স ল্যাবরেটরি, বায়োসেফটি লেভেল ৩ (বিএসএল-৩ ল্যাব) নামক ল্যাবরেটরিটি বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সিলেটের বক্ষব্যাধী হাসপাতালকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ল্যাবরেটরিটি ইউএসএইডের অর্থায়নে পরিচালিত, টি.বি. কেয়ার টু এবং চ্যালেঞ্জ টিবি নামক দুটি প্রোজেক্ট দ্বারা পরিকল্পিত, নির্মিত এবং ইনস্টল করা হয়েছিল এবং পুরো প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) সিলেট এবং সিভিল সার্জন, সিলেট।
সিলেটের বক্ষব্যাধী হাসপাতাল সংলগ্ন বিএসএল-৩ ল্যাবটিতে নাম ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এরপর পূর্ব দরগা গেইটে স্টার প্যাসিফিক হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরীক্ষাগারটির হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
বাংলাদেশে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধির কা্রণে যক্ষার পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি সংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সর্বোচ্চ সুবিধাসম্পন্ন বায়োসেফটি তিন স্তরের এ ল্যাবরেটরিটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীদের দ্রুত ও মানসম্মত সেবা প্রদান করবে।
অত্যাধুনিক ডায়াগনিস্টিক টেকনোলজি সম্পন্ন এ ল্যাবরেটরী ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার পরীক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। একটি শিপিং কন্টেইনারের ভিতরে নির্মিত এ পরীক্ষাগার সম্পূর্ণ নিরাপদ, নির্ভুল এবং সাশ্রয়ী পন্থায় যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম।
পরীক্ষাগারটি সলিড কালচার ও ডিএসটি এর মাধ্যমে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্তরের ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্নয় করার পাশাপাশি এটি জিন এক্সপার্ট প্রক্রিয়া এবং অত্যাধুনিক ডায়াগনষ্টিক যন্ত্রাংশের সহায়তায় রফাম্পিসিম প্রতিরোধকারী যক্ষ্মা দ্রুত সনাক্ত করবে।
এটি জাতীয় ওষুধ প্রতিরোধকারী যক্ষ্মা বিষয়ক জরিপ, গবেষণা এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনায় একটি কেন্দ্রীয় গবেষণাগার হিসেবেও কাজ করবে।
এসময় অর্থমন্ত্রী ল্যাবরেটরির সফলভাবে প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করার জন্য এনটিপি, স্থানীয় সরকার ও স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে সিলেট জেলার সিভিল সার্জনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইউএসএআইডি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য সাধুবাদ জানান।
ইউএসএআইডি প্রতিনিধি ডা. আলিয়া আল মোহান্দেজ, সিনিয়র ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাডভাইজর, অফিস অব দি পপুলেশন, হেল্থ, নিউট্রিশন অ্যান্ড এডুকেশন, ইউএসএআইডি, বাংলাদেশ সিলেটে এই অত্যাধুনিক ডায়াগনষ্টিক টেকনোলজি সম্পন্ন যক্ষ্মা নির্ণয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার জন্য জাতীয় ও স্থানীয় সরকারি সংস্থার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং এর কার্যক্রম চালু রাখার জন্য সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানান ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক এমবিডিসি ও লাইন ডাইরেক্টর টিবি-লেপ্রসী অ্যান্ড এএসপি অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম, ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদুত, জাতিসংঘ, ডা: মো: ইহতেশামুল হক চৌধুরী; মহাসচিব, বিএমএ এবং প্রাক্তন অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) ও লাইন ডিরেক্টর, টিবি-লেপ্রসী ও এএসপি, ডা. হিমাংশু লাল রায়; সিভিল সার্জন, সিলেট, ডিভিসনাল ডিরেক্টর, প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ, মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডা. আলিয়া আল মোহান্দেজ; সিনিয়র ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাডভাইজর, অফিস অব দি পপুলেশন, হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড এডুকেশন, ইউএসএআইডি, বাংলাদেশ এবং ডা. অস্কার কর্ডন; কান্ট্রি প্রজেক্ট ডিরেক্টর, চ্যালেঞ্জ টিবি প্রজেক্ট সহ ম্যানেজমেন্ট সাইন্সেস ফর হেলথ, আইআরডি এবং অন্যান্য অংশীদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস